কিভাবে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায়? স্বাধীন পেশা ফ্রিল্যান্সিং

অধিকাংশ সফল ফ্রিলান্সারই স্বাধীন জীবনযাপন এবং পৃথিবী ভ্রমন করে থাকেন। সুতরাং একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া মোটেও সহজ কাজ না। কিন্তু আপনারা যদি আমার লেখাগুলো পড়ে থাকেন এবং বিষয়বস্তু গুলো অনুসরণ করেন তাহলে আমি আশাবাদি যে আপনারা একজন সফল ফ্রীলান্সার হতে পারবেন।

 

ফ্রিলান্সার কে?

ফ্রিল্যান্সার একজন ব্যক্তি  যে তার সেবা প্রদান  করে থাকেন। জ্ঞান এবং দক্ষতার জন্য পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। সাধারণভাবে, একজন ফ্রিলান্সার স্বাধীনভাবে কাজ করেন, মূল ভূমিকা পালন করেন একজন বস ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, একজন একক নিয়োগকর্তার সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক প্রত্যাশা করেন না।

 

আপনি কি ফ্রিলান্সার হতে চান?

আপনার  অতিরিক্ত কিছু আয়ের জন্য এবং সঞ্চয় করার জন্য অনেক দিন ধরে কিছু বিশেষ ট্রিপ বা পরামর্শ অথবা আপনার যাবতীয় খরচ চালানোর পথ খুজছেন এটা তাদের জন্য একটি সঠিক পদক্ষেপ হতে পারে। আপনি আপনার নিয়মিত কাজ করতে পারেন এবং একই সময়ে একটি ফ্রিলান্সার হতে পারবেন। তবে নিজেকে একজন সফল ফ্রিলান্সার হিসেবে তৈরি করতে চাইলে অবশ্যই পরবর্তী  অনুচ্ছেদগুলোতে ভালভাবে মনযোগ দিতে হবে।

 

একজন সফল ফ্রিলান্সার হতে হলে আমাকে কি করতে হবে?

মূলত আপনার এমন কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে যেগুলো আপনি ক্লাইন্ট বা গ্রাহকদের কাছে উপস্থাপন করতে পারেন। একটি বিশেষ দক্ষতা, প্রতিভা, একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র বা ভাল অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আপনার কাজের  একটি পোর্টফলিও আপনার কাজের দক্ষতা প্রমাণের জন্য কাজে আসতে পারে, কিন্তু আপনাকে এমন কিছু তৈরী করতে হবে যা আপনার সাথে ক্লাইন্টদের সম্পর্ক স্থাপনের রাস্তা তৈরী করে দেয়।

ফ্রিল্যান্সার

কি করতে হবে?

০১। আপনার সময় সংগঠিত এবং একটি সময়সূচী তৈরী করাঃ

না বুঝে মাত্রাতিরিক্ত  কাজ গ্রহণের ফাঁদে পা দিবেন না। তখনই আপনি সেটা পারেন যদি আপনি কাজগুলো সঠিক ভাবে প্রদান এবং প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন। নিশ্চিত হওন যে আপনি সময় সংগঠিত করতে পারবেন। ফ্রিলান্সিং কাজের করার জন্য একটি বিশেষ ক্যালেন্ডার তৈরী এবং উপকরণ তৈরি করুন।

 

০২। মনে রাখতে হবে কাজ সবসময় স্থায়ী হবে নাঃ

বছরের কিছু নির্দিষ্ট সময় বাস্ততার মধ্য দিয়ে যায় সুতরাং সেই সময় অনেক বেশি পরিমানে কাজ পাওয়া যায়। যদিও বছরের কিছু সময় ঠিক এটার বিপরীত ও হয়ে থাকে। তাই বলে কখনই নিরুত্সাহিত হওয়া ঠিক হবে না। এটা একটি স্বাভাবিক বিষয় যে প্রত্যেক পেশাতেই এমনটা ঘটতে পারে হোক সেটা হোম ভিত্তিক, অফিস ভিত্তিক, ছোট ব্যবসা অথবা একটি বৃহৎ কর্পোরেশন জব।

 

০৩। ইংরেজি সাবলীলতা:

আপনাকে ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক হতে হবে না, তবে অন্তত নিয়োগকারীর চুক্তিসমূহ বুঝে নেবার দক্ষতা থাকতে হবে, ইমেইল এবং স্কাইপে চ্যাট করে যোগাযোগ করতে সক্ষম হতে হবে।

 

০৪। কম্পিউটার দক্ষতা:

আপনাকে অবশ্যই বেসিক সফটওয়্যার উদাহরণ স্বরূপ মাইক্রসফট অফিস এর কাজ জানতে হবে যদিও এটা একটি খুবই সাধারণ কাজ। সেইসকলর গুরুত্তপুর্ন এবং নির্দিষ্ট কাজের জন্য আপনাকে আরো অনেক ধরনের প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানতে হবে এবং অনেক বেশি দক্ষতা থাকতে হবে।

 

০৫। প্রাথমিক অবস্থায় সামান্য অর্থের জন্য কাজ করার ইচ্ছা/মানসিকতা থাকতে হবেঃ

আপনি প্রতি ঘন্টায় ১ ডলার দিয়ে শুরু করতে পারেন কিন্তু যদি আপনি কাজের মাধ্যমে সুখ্যাতি অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনি আরো বেশি পরিমানে আয় করতে পারবেন।

 

০৬. অধ্যবসায়ঃ

যদি আপনি ১ মাসের মধ্যেও যদি আপনি কাজ না পেয়ে থাকেন তবুও হাল ছেড়ে দিবেন না।  তাড়াহুড়া করবেন না এবং প্রথম দিনেই সবগুলো সংযোগ খরচ করবেন না কিন্তু সতর্কতার সাথে কার্যক্রম গুলো নির্বাচন করতে হবে যেগুলো লগ করা হবে। এরপর দেখবেন সবকিছু সহজ হয়ে গেছে।

 

০৭. কঠোর পরিশ্রমঃ

আপনাকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং নির্দিষ্ট্য সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার জন্য দিন রাত কাজ করার ইচ্ছা বা মানসিকতা থাকতে হবে। ক্লাইন্টদের প্রতি অবশ্যই সম্মান প্রদর্শন করতে হবে এবং অনুমোদিত সময়ের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন করতে হবে কারন তিনি আপনার উপর নির্ভরশীল। যদি আপনি এই ধরনের কাজের জন্য প্রস্তুত না থাকেন, তাহলে আপনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন না।

 

০৮. কাজের বিবরণ উপর ফোকাসঃ

নিয়োগকর্তাকে জানান যে আপনি কাজের বিবরণ সম্পূর্ন পড়েছেন এবং আপনি সম্পূর্ন বুঝতে পেরেছেন  যে আপনার নিয়োগকর্তা কি খুজছেন এবং আপনি জানেন যে কিভাবে তার কাজটা করতে হবে। কাজটিতে নির্দিষ্ট কিছু প্রয়োজন হলে নিয়োগকর্তাকে ঐ কাজের কিছু নমুনা পাঠাতে পারেন অথবা অতীতে সম্পন্ন করা কোন কাজের নমুনা পাঠাতে পারেন যেটা সম্পন্ন হয়ে গেছে অথবা জবের প্রয়োজনীয়তার অনুরুপ কিছু পাঠাতে পারেন।

মোটামুটি আপনার অপশন এবং সময় নির্ধারন করুন। অযথা অযৌক্তিক সময়সীমা নির্ধারণ করবেন না যেটা আপনি পূরণ করতে পারবেন না।

 

০৯। সর্বদা একটি প্রশ্ন করতে হবেঃ

কাজ সম্পর্কে নিয়োগকর্তাকে জিজ্ঞাসা করুন। এটা আপনাকে নিয়োগকর্তার নির্ধারিত কাজটি পাবার জন্য একধাপ এগিয়ে নেবে।

 

১০। একটি ভাল প্রোফাইল তৈরি করুনঃ

আপনার প্রোফাইলের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন। বানান এবং গ্রামারটিক্যাল ত্রুটিমুক্ত হতে হবে। সৎ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। শুধুমাত্র আপনার রেফারেন্স এবং কাজ এবং প্রায় মূর্খতা বর্জন করুন। যদি তুমি মিথ্যা বলো তাহলে এটার পরিণতি সুদূরপ্রসারী হতে পারে।

 

১১। আপনার বিড আপনার উপস্থাপনাঃ

সাধ্যমত চেষ্টা করুন। এটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আপনার লক্ষ্য স্থির এবং এটাকে আরও ভালো করার ক্ষেত্রে। খুব সস্তা বা খুব দামী না, মাঝামাঝি অবস্থানে থাকতে হবে অথবা আপনার দক্ষতা অনুযায়ী মূল্য সংযোজন করুন।

 

১২। সর্বত্র চেষ্টা করুন এবং অধ্যবসায়ী হওনঃ

অন্বেষণ করুন এবং দেখুন সবকিছুরই একটি উদ্দেশ্য আছে, চেষ্টা করুন সম্পন্ন করার। যখন আপনি সেটা করবেন, ধর্য হারা অথবা ছেড়ে দিবেন না। সম্ভবত আপনি শীর্ষ ৩০ টা জবের মধ্যে ১টি জবও নাও পেতে পারেন যেগুলোর জন্য আপনি আবেদন করেছেন। হয়তো ৫০ এমনকি ১০০। যাই হোক পরিশেষে আপনি যখন একটি জব পাবেন তখন এটা আপনার কাছে অনেক সহজ মনে হবে।

 

১৩। খ্যাতিই সবকিছুঃ

এখানে একেবারে কিছুই না যেটা আপনার ব্যবসার ভাল একটি পর্যালচনা করতে পারে এবং তারা সামান্য কিছু খারাপ সংশোধন করতে পারেন, যদি এটা বাস্তবসম্মত হয়।

অতএব:

____সেই জব-ই নিন যেটা আপনি সত্যিই বুঝতে পেরেছেন এবং আপনি করতে পারবেন।

____কাজটি সময়মত এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে।

____সবসময় সর্বাধিক সৎ হতে হবে, এমনকি যদি  অন্য কেউ সৎ না হয়েও থাকে।

 

১৪। উন্নত বিকল্পগুলি অন্বেষণ এবং তা ব্যবহার করুনঃ

যদি সেবা প্রদানের সম্ভাব্য অর্থ নিরাপদ (এসক্র) হয়ে থাকে, তাহলে এটি ব্যবহার করুন।

 

১৫। কাজ ঘন্টাপ্রতি খরচঃ

আপনার উদ্দেশ্য বিবেচনা করুন। ঘন্টায়  ৫ থেকে ৬ ডলার কম বেতনের চাকরি জন্য এবং ভাল জন্য ১৫ থেকে ২০ ডলার দিয়ে শুরু করুন। বাস্তব চিত্রের জন্য ডেভেলপার এবং ডিজাইনারদের ৩০ ডলার থেকে ৪০ ডলার ভার্চুয়াল সহায়ক এবং অন্যান্য নিম্ন বেতনভোগীদের ৮ থেকে ১২ ডলার। আমি মনে করি ৫০% থেকে ৬০% সময়ের মধ্যেই পূরণ করতে হবে।

 

১৫। আপনাকে সুপারিশ করার জন্য মানুষকে বলুনঃ

একবার যখন আপনি একটি কাজ ভালভাবে সম্পন্ন করবেন, ক্লাইন্টকে একটি পর্যালোচনা লেখার জন্য বলবেন। এছাড়া আপনিও এটার জন্য অনেক গুলো ওয়েব সাইটে ক্লাইন্টদেরকে ধন্যবাদ জানাতে পারেন এবং আপনি ভাল নিয়োগকর্তাদের মূল্যায়ন করতে পারেন। সস্তা শব্দ ব্যবহার করবেন না।

 

১৬। একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করুনঃ

আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট বা একটি অনলাইন পোর্টফলিও করুন। সোস্যাল মিডিয়া প্লার্টফর্ম সমূহের সাথে সম্পৃক্ত হন উভয় বিজ্ঞাপন দিতে এবং আরো ক্লায়েন্ট পেতে। প্লাস, এটা আপনাকে বর্ণনাযোগ্য করবে।

 

লেখাটি অনুবাদ করেছেন মানিক ENGLISH

ফ্রিল্যান্সার, ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করুন আমি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দিব ইনশাআল্লাহ্‌ ।

 

6 thoughts on “কিভাবে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায়? স্বাধীন পেশা ফ্রিল্যান্সিং”

  1. সুন্দর একটা আর্টিকেল, যারা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে চায় তাদের জন্য আমি মনে করি একটি প্রয়োজনীয় আর্টিকেল।

    Reply

Leave a Comment